শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (স.)এর জন্ম ও বাল্যকাল- (পর্ব-০১)

মানবকূলের শিরোমণি হযরত মুহাম্মদ (স.) মক্কার বিখ্যাত কুরাইশ বংশে ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ আগস্ট (১২ই রবিউল আউয়াল মতান্তরে ৮ই রবিউল আউয়াল) সোমবার সকালে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতার নাম আবদুল্লাহ,মাতার নাম আমিনা। নবীজির জন্মের পূর্বেই পিতা আব্দুল্লাহ ইন্তেকাল করেন(২৫ বছর বয়সে)। দাদার নাম আব্দুল মুত্তালিব। নানার নাম আবদুল ওহাব। দাদা আবদুল মুত্তালিব এতিম শিশুর নাম রাখেন মুহাম্মদ। মুহাম্মদ অর্থ প্রশংসিত। মা আমিনা নাম রাখেন আহম্মদ। আহম্মদ অর্থ সর্বাধিক প্রশংসাকারী।

 

নবীজির প্রথম দুধমা আবু লাহাবের দাসী সুয়ায়বা। প্রধান দুধমা তায়েফের বনু সাদ গোত্রের আবু খাবসার স্ত্রী বিবি হালিমা। পাঁচ বছর বিবি হালিমার নিকট ছিলেন। এসময় তিনি মাঠে মেষ চরানো সহ বিশুদ্ধ আরবি ভাষায় কথা বলা শেখেন। ছয় বছর বয়সে মা আমিনাকে হারান। আট বছর বয়সে দাদা আবদুল মুত্তালিবকেও হারান। এরপর চাচা আবু তালিবের নিকট লালিত পালিত হতে থাকেন। এসময় ৫৭২ খ্রিস্টাব্দে ১২ বছর বয়সে ব্যাবসা উপলক্ষে চাচার সাথে সিরিয়া যান। সিরিয়ার বাজারে বুহাইরা নামে এক খ্রিস্টান পাদ্রি বালক মুহাম্মদকে দেখে শেষ নবী হিসেবে চিন্তে পারেন। বাল্যকাল থেকেই নবীজির সত্যবাদিতা,ন্যায়পরায়ণতা,কোমল স্বভাব ও অমায়িক ব্যবহারের জন্য মক্কার মানুষ তাকে আল-আমিন বা বিশ্বাসী উপাধি দেয়। মক্কার অদূরে আয়োজিত উকাজ মেলাকে কেন্দ্র করে ৫৮৪ খ্রিস্টাব্দে পবিত্র জিলকদ মাসে কুরাইশ ও হাওয়াজিন গোত্রের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে চলা এ যুদ্ধের ভয়াবহতা বালক মুহাম্মদের মনে গভীর রেখাপাত করে। সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ৫৯১ খ্রিস্টাব্দে সমমনা কয়েকজন উৎসাহী যুবক ও পিতৃব্য যুবায়েরকে নিয়ে হিলফুল ফুজুল নামে শান্তি সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন। যে সংঘের সদস্য ছিলেন ফজল,ফাজেল, ফাজায়েল ও মোফাজ্জল সহ আরও অনেকে। এই সংঘের উদ্দেশ্য ছিল শান্তি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা, বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে সদ্ভাব স্থাপন ও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বন্ধ করা, অত্যাচারীকে বাধা দেওয়া ও অত্যাচারিতকে রক্ষা করা, দুর্বল,অসহায় ও এতিমদের সাহায্য করা। এই সংগঠন তার উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সফল হয়েছিল।…….(চলমান)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *